হাকিকুল ইসলাম খোকন : আগামী ২০ জানুয়ারি জো বাইডেনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে প্রেসিডেন্ট যদি আরও ভারসাম্য হয়ে পড়েন, তাহলে সেই পরিস্থিতি মোকাবেলায় এমন বিকল্প হাতে রেখে দিতে চান তিনি। ভাইস-প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন এমন খবর দিয়েছে। সূত্র বলছে, ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগ বা এমনকি অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু নিয়ে পেন্সের টিমের মধ্যে শঙ্কা কাজ করছে। কারণ ট্রাম্প এমন কিছু অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, যাতে পুরো জাতি ঝুঁকিতে পড়ে যাবে। বুধবার ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডব চালানোর পর থেকে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পেন্সের কোনো কথা হয়নি। ওই দাঙ্গায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পেন্সকে উদ্দেশ্য করে সামাজিকমাধ্যমে দেয়া হত্যার হুমকির নিন্দা জানিয়ে ট্রাম্পকে প্রকাশ্যে কোনো কথা বলতে দেখা যায়নি।
একটি সূত্র জানিয়েছে, পেন্স চূড়ান্তভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ক্ষমাহীনতার আভাস পেয়েছেন। এছাড়া দুটি সূত্র জানিয়েছে, পেন্সের ওপর ট্রাম্প বেজায় ক্ষুব্ধ এবং ট্রাম্পের ওপর পেন্স অসন্তুষ্ট ও ব্যথিত। বুধবার কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে নির্বাচনের ফল উল্টে দেয়ার অনুরোধ করে পেন্সকে এক অসম্ভব অবস্থায় ফেলে দিয়েছেন ট্রাম্প। পেন্সের ব্যাখ্যা ছিল, তিনি এমন কিছু করতে পারবেন না। সংবিধান অনুসরণে কংগ্রেস সদস্যদের তিনি চিঠি দিয়েছিলেন।সেদিন সমাবেশে থেকে ক্যাপিটল ভবনের দিকে পদযাত্রা করতে সমর্থকদের উৎসাহিত করেছেন ট্রাম্প। আর নিজের ভাইস-প্রেসিডেন্টকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করছি, আমাদের সংবিধান ও দেশের ভালোর পক্ষে আপনি অবস্থান নেবেন। যদি আপনি সেটা না করেন, তবে আমি খুবই মনক্ষুণ্ণ হবো। আপনাকে আমি এখন সেটিই বলবো। আমি কোনো ভালো কাহিনি শুনতে পাচ্ছি না।’
গত চার বছরে পেন্স এই প্রথম প্রকাশ্যে ট্রাম্পের বিরোধিতা করেছিলেন এবং এখনো করছেন। এ পর্যন্ত যত ঘটনাই ঘটুক, ট্রাম্পের হয়ে লড়েছেন পেন্স। ট্রাম্পের নানা বিতর্কিত বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডকে আড়াল করার চেষ্টা করেছেন। গোপনে প্রেসিডেন্টকে সামলানোর চেষ্টা করলেও প্রকাশ্যে কোনো দিন তার বিরোধিতা করেননি। বরং সব জায়গায় তিনি ট্রাম্পের নানা বক্তব্যের সমর্থনে যুক্তি উপস্থাপন করেছেন। কখনো কখনো ট্রাম্পের করা কোনো বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতি সামলেছেন একা হাতে। কিন্তু, চরম সংকটকালে ঠিকই রাষ্ট্রের কাঠামোকে সমুন্নত রাখতে কাজ করেছেন।